গবেষণার ডেটার উপর ভিত্তি করে, একজন ব্যাক্তি গড়ে প্রতিদিন ২৬০০ বার তার মোবাইল ফোন স্পর্শ করে। শুধু কি তাই, মাঝে মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউবে অথবা নেটফ্লিক্সে ভিডিও দেখে। মজা যেন শেষ হচ্ছে না। মানে, নতুন কোনো বিষয় যখন মানুষ হাতে পায়, তখন মনে হয়, আরে এ কি জিনিসরে বাবা!! ভীষণ মজা তো, বার বার নতুন জামা দেখার মতন অবস্থা।
এখানে আপনি যদি ৩ ঘন্টা সময়ও নষ্ট করেন, সময়ের মূল্য না দেন। তবে এটি কেবল আপনার বাকি জীবনকেই প্রভাবিত করবে না। এটি আপনার চাকরি, পড়াশোনা বা ব্যবসা সব জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমাদের ভেতর এমন কিছু মানুষ আছে যাদের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিলে তারা অস্থির হয়ে যায়।
কেউ কেউ আবার মানসিক চাপ অনুভব করে। এটা এক ধরণের নেশা বা আসক্তিতে পরিণত হয়েছে। এই আসক্তির পিছনে বিজ্ঞান কি বলে?
সময়ের মূল্য কত দিতে হচ্ছে আমাদেরকে?
এর সমাধানটা কি হতে পারে?
শব্দ, অ্যানিমেশন, একটির পর একটি বিষয় বস্তু, চরম আকর্ষণ স্কিনে। এই আসক্তি আসলে তুলনা করা যেতে পারে সিগারেট, ড্রাগস বা জুয়ার মতন আসক্তির সাথে, আসক্তি ক্ষতিকর। যেকোনো রকমের আসক্তির জন্য প্রত্যেকের শরীর এক একটি সেট প্যাটার্নকে অনুসরণ করে। এটি ডোপামিন প্যাটার্ন হিসাবে পরিচিত। প্রথমেই বোঝার চেষ্টা করি ডোপামিন কী।
আমাদের মস্তিষ্ক থেকে উৎপন্ন এক ধরণের নিউরোট্রান্সমিটার, যার কাজ মস্তিষ্কের এক অংশ থেকে অন্য অংশে বার্তা পাঠানো। যার মাধ্যমে মানুষকে মানসিকভাবে স্থিতিশীল ও কর্ম ক্ষম রাখে।
ধরুন, আপনি পরীক্ষায় পাস করেছেন। প্রথম দিন খুব আনন্দ হবে, আনন্দে আপনি নাচা-নাচি করলেন। সেই আনন্দ কি এক মাস পরেও থাকবে? না কি হঠাৎ মনে পড়লো, যে আপনি পরীক্ষায় পাস করেছিলেন। আর মনে পড়া মাত্রই আপনি আবারো প্রথম দিনের মতো আনন্দে নাচা-নাচি করা শুরু করবেন। অথবা, আপনি ধনী হতে চেয়েছিলেন, হয়েও গেলেন। প্রতিদিন কি বিষয়টি নিয়ে আপনি আনন্দ করতে পারবেন। ভালো লাগবে আপনার নিজের কাছে। দেখবেন নতুন কোনো চাহিদা, সমস্যা আপনার সামনে আসবে, আপনি নতুন উদ্যোমে সেটি বাস্তবায়ন করার জন্য স্বপ্ন বুনবেন মনে মনে।
কিন্তু যখন দেখা যায় যে, বছরের পর বছর ধরে আপনি একই ভাবে আনন্দ উপভোগ করছেন স্কিনে এবং প্রথম দিনের মতোই মজা পাচ্ছেন। সময়ের মূল্য খুব বেশি বলে,`7 আপনার কাছে মনে হচ্ছে না। তাহলে বিষয়টি অনেকটা পরীক্ষার পাশের মতন হয়ে যাবে। অথবা বাবা অফিস থেকে আসার সময় আপনাকে ফোন দিয়ে বলেছে আপনার জন্য আইসক্রিম আনবে। আপনার জিহবার ভেতর আইসক্রিম এর স্বাদ লক-লক করে উঠলো। আপনার খুব আনন্দ হলো যে, আইসক্রিম আসছে। প্রথম দিন এমন হলো, পরের দিনও আপনার বাবা একই কাজ করলেন, আজও আপনার আনন্দ হলো। এভাবে সপ্তাহের প্রতিদিন একই ঘটনা ঘটতে লাগলো। এখন কয়েক দিনের ভেতরেই আপনি জানেন যে আইসক্রিম আসছে, বিষয়টি আর আপনাকে তেমন আনন্দিত বা পুলকিত করে না। করবে না, কারণ করা অস্বাভাবিক।
এটাই স্বাভাবিক, কাজের আসক্তি, টাকার আসক্তি বা বইয়ের ভেতর আসক্তি আনতে হবে। এই কয়কটি আসক্তি আপনার জীবনেকে সুন্দর করবে। সময়ের মূল্য দিতে হবে।