পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট শিশুর জন্য
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট নিয়ে প্রতি মুহূর্তে বাচ্চা ও অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার শেষ নাই। ছোট ছোট বাচ্চার জীবন ওষ্ঠাগত। রেজাল্ট খারাপ করা শিশুদের অবস্থা শোচনীয়, আর তাদের অভিভাবকদের অবস্থাতো আরো খারাপ।
ছোট বয়সে শিশুকে যা যা শেখানো হয় সেগুলো সে আজীবন মনে রাখবে, তাই তার পড়াশুনার অভ্যাসটি সুন্দর ভাবে তৈরী করে ফেলুন এখনই। আর ঠিকঠাক মতো পড়ালে শিশুর পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের সামনে বাধা হইয়ে কেও দাঁড়াতে পারবে না। আর তাই শিশুকে কিভাবে পড়াবেন তা নিচে বর্ণনা করা হলো:
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করানোর সঠিক কিছু উপায়:
শিশুকে রিডিং পড়াবেন কিভাবে:
আপনার আদরের শিশুটি প্রতি মুহূর্তে তার চারিপাশ থেকে নতুন নতুন শব্দ শুনছে ও শিখছে। আপনি বিভিন্ন গল্প, ছড়া বই থেকে রিডিং পড়ে শুনাতে পারেন। আবার মাঝে মাঝে গান গেয়ে আনন্দ দিতে পারেন। এতে তার শব্দ ভান্ডার বাড়তে থাকবে। পাশাপাশি পরবর্তীতে স্কুলে শিক্ষকের কথা সে সহজেই বুঝতে পারবে। যেহেতু সব কথা বুঝতে পারবে তাই স্কুলে সে অন্যদের থেকে একটু এগিয়ে থাকবে। ফলে স্কুলকে তার খুব ভালো লাগবে। সাধারণত শিশুরা ওই সময়টাতেই সহপাঠীদের কাছ থেকে সামনে অথবা পেছনের বেঞ্চে চলে যায়।
শিশুর পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের জন্য বাসার পরিবেশ:
ভালো রেজাল্টের জন্য, শিশুর বাসার পরিবেশ সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, যে সকল বাসায় বড়রা নিয়মিত শিশুর সামনে পড়ালেখা করে এবং অনেক বই খাতা আছে সেই সকল বাসার বাচ্চারা স্কুলে ভালো করছে। কারণ স্বাভাবিক ভাবেই তারা ছোট থেকেই বই খাতাকেই জীবনের একটি অংশ হিসেবে ধরে নেয়। তাই মানুষিক ভাবে তারা বইএর খুব কাছে থাকে।
শিশুর যা আছে তাতেই খুশি থাকতে শেখান:
ধীরে ধীরে শিশুটিকে আপনার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থানের ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলুন। কিভাবে আপনি চাকুরী বা ব্যবসা করে সংসার চালান, যা আপনি খেলার ছলে বুঝাতে পারেন। এই অবস্থার থেকেও অনেক শিশু আরো খারাপ অবস্থায় আছে ধীরে ধীরে তাকে তাও বুঝান। রাস্তা বা আশেপাশের অন্যান্য অসহায় মানুষরা কিভাবে কষ্ট করে জীবন যাপন করছে তা বুঝান। একটা সময় সে নিজেই আপনার থেকেও ভালো বুঝতে শিখে যাবে। এতে করে সে মানুষিক প্রশান্তি বোধ করবে। আর তার মনটা পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ বোধ করবে।
শিশুর বেপরোয়া চাহিদা ঠেকাবেন কিভাবে:
যখনি আপনার শিশু কিছু চায় সাথে সাথে কিনে না দিয়ে বরং একটু ধর্য্য ধরে তাকে বুঝান যে আসলেই তা কি তার দরকার কি না? অনেক সময় তারা আপনার সামর্থের বাহিরের জিনিস চেয়ে বসে, এমন অবস্থায় রেগে না গিয়ে বলুন, ” অবশ্যই ওটা তুমি পেতে পারো, ওটা খুব ভালো একটা জিনিস তবে আজ নয় কাল বা পরশু দিবো। এই ফাঁকে তুমি ভেবে দেখ ঐটা কি খুব দরকার তোমার জন্য?” খেয়াল করুন শেষের কথাটা খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। তাকে আপনি দায়িত্ব দিয়ে দিলেন যে ঐটা দিয়ে সে আর কি কি করতে পারে তা খুঁজে বের করতে। গবেষণায় দেখা গেছে ৯০ শতাংশ শিশুর ক্ষত্রে চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে। মনে রাখবেন, শিশুর এটা ওটা চাওয়ার অভ্যাসটা স্বাভাবিক আর কিছু না চাওয়াটা অস্বাভাবিক। এভাবে যদি আপনি তাকে নিয়ন্ত্রণ করেন তবে তার চিন্তা ভাবনার গভীরতা বৃদ্ধি পাবে। যেটা শিশুর পরীক্ষার ফলাফলের উপর প্রভাব ফেলে।
সৃষ্টিশীল কাজকে উৎসাহ দিন:
শিশুর সাথে সৃষ্টিশীল কাজ গুলো ভাগ করুন। দেখবেন সেই কাজটি আপনার মতো সুন্দর করে সে করছেনা বা কাজটি সে নষ্ট করছে। তবুও তাকে উৎসাহ দিন যে খুব ভালো হচ্ছে। ধীরেধীরে সে আরো সুন্দর করে কাজ করতে শুরু করবে। মাঝেমাঝে আপনি কাগজে ছবি একে শিশুকে রং করতে দিবেন। সেই ছবি ঘরের দেওয়ালে লাগিয়ে দিন। তবে একটু চেষ্টা করবেন যেন, প্রতিটি বিষয়ের সাথে শিক্ষণীয় বিষয় জড়িয়ে থাকে।
শিশুর পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের উপর খেলাধুলার ভূমিকা :
শিশুর সাথে আপনি খেলাধুলা করুন। সেখানেও চেষ্টা করবেন শিক্ষণীয় খেলা খেলতে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মস্তিষ্কে শিশুকালের শিক্ষণীয় খেলাগুলো ব্যাপক সুফল বয়ে আনে। ব্লক, দাবা, পাজল খেলা মস্তিষ্ক বিকাশে ব্যপক ভূমিকা রাখে। যা স্কুলের পড়াশুনার উপর প্রভাব রাখে। আপনার শিশু আগামী দিনের রক্ষক। শিশুটি যদি ছোট বেলা থেকে সুন্দর ভাবে বড় হতে না পারে তবে পৃথিবীর ভবিষ্যৎও সুন্দর হবে না। তাই আমাদের সবারই আশেপাশের সকল শিশুদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
শিশুদের হয়ে থাকে এমন একটি সমস্যা ও তা থেকে মুক্তির উপায় জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের এই লিংকে ক্লিক করতে পারেন।
শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, তাই তাদেরকে খুব সাবধানে লালনপালন করবেন। আপনার বাচ্চার সামনে যেমনটি করবেন, সাধারণত তাই সে শিখবে এবং ভবিষ্যতে জীবনের চলার পথে তাই এপলাই করবে।