রেসিপিস্বাস্থ্য

ঘি এর বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করার সহজ উপায়

ঘি এর বিশুদ্ধতা

এক সময় আমাদের এই উপমহাদেশে ঘরে ঘরে ঘি দিয়ে নানা রকমের খাবার ও বিভিন্ন ধরণের মিষ্টান্ন তৈরি করা হতো। খাবারে চমৎকার স্বাদ ও সুবাসের জন্য এটি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। এছাড়াও স্বাস্থ্যের সুস্থতার জন্য এটি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বিশুদ্ধ ঘি এর অভাবে ধীরে ধীরে পরিবারগুলো থেকে ঘি এর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। এখন বিশেষ অনুষ্ঠানে রান্নায় ঘিয়ের নাম উঠে আসে। এছাড়াও ঘি অনেক আয়ুর্বেদিক ওষুধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে কিছু অসাধু মানুষের ভেতরে ভেজাল ঘি তৈরির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাই এখন আর শুধুমাত্র রঙ ও গন্ধ দেখে বিশুদ্ধতা পরীক্ষা সম্ভব হয়ে উঠে না।

ঘি থেকে যা যা পাওয়া যেতে পারে:

 ভিটামিন সি,  ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ভিটামিন ডি

ভিটামিন ইও ঘি থেকে পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন ই তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি আর্থ্রাইটিস, ক্যান্সার  এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ঘি এর উপকারিতা:

নিচে উপকারিতাগুলোর উপর সামান্য আলোচনা করা হলো:

  • প্রতিদিন ঘি খেলে আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো হবে।
  • দৃষ্টিশক্তি উন্নত করবে এবং পেশীকে সুস্থ রাখবে।
  • কেও শরীরের ওজন বাড়াতে চাইলে ব্যবহার করতে পারে।
  • শরীরের ভেতরের কিছু চর্বির জন্য এটি ভালো যা কোষের ঝিল্লিকে মজবুত করে, পাকস্থলীকে নিরাপদ করে এবং স্নায়ু, মস্তিষ্ক, ত্বক ও শরীরকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
  • তাছাড়া খাবারের স্বাদ বাড়াতে তো সাহায্য করেই।

কিছু অপকারিতাও আছে ঘিতে:

অপকারিতাগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

  • অতিরিক্ত ঘি খেলে আপনার ওজন দ্রুত বেড়ে যাবে।
  • আর আপনি জানেন অতিরিক্ত ওজন থেকে বিভিন্ন ধরণের রোগ সৃষ্টি হয় আর কোলেস্টেরল তো বাড়ায়ই।
  • ওজন বৃদ্ধি গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও বেশ বিপদজনক।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ঘি খাওয়া হার্টের জন্য ভালো নয়।

ঘি এর বিশুদ্ধতা পরীক্ষা

পদ্ধতি ১

একটি পাত্রে ঘি গলিয়ে পরীক্ষা করা হলো সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। প্রথমে একটি পাত্র নিয়ে চুলায় কিছুক্ষন গরম করে তারপর পাত্রে এক চা চামচ ঘি দিয়ে দিন। অপেক্ষা করুন ঘি যদি খুব দ্রুত গলে যায় এবং বাদামি রং ধারণ করে , তাহলে বুঝতে  হবে এটি খাঁটি ঘি। তবে ঘি যদি গলতে একটু সময় লাগে এবং হলুদ রঙ ধারণ করে তাহলে বুঝতে হবে এটি ভেজাল ঘি।

পদ্ধতি ২

হাতের তালুতে নিয়েও ঘি পরীক্ষা করা সম্ভব। এক চা চামচ ঘি আপনার হাতের তালুতে নিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে থাকুন। ঘি যদি তাড়াতাড়ি গলে যায় তবে বুঝতে হবে তা খাঁটি  ঘি , আর যদি গলে না যায় তবে তা ভেজাল ঘি।

পদ্ধতি ৩

এই পদ্ধতিতে ঘিতে নারকেল তেল মেশান হয়েছে কিনা তা বোঝা সম্ভব। একটি কাঁচের বাটিতে কিছু ঘি নিয়ে নিন এবং তা গরম পানির উপরে রেখে গলিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি একটা বয়েমে ভরে কিছুক্ষন ফ্রিজে রেখে দিন। কিছুক্ষন পর নারকেল তেল ও ঘি আলাদা আলাদা  স্তরে শক্ত হয়ে যাবে, তখন বুঝতে হবে ঘি ভেজাল। আর এমনটা না হলে ঘি খাঁটি।

পদ্ধতি ৪

এই পদ্ধতিতে  আয়োডিনের  দ্রবণ দিয়ে পরীক্ষা করা যায়। অল্প পরিমাণে গলানো ঘি নিয়ে তাতে দুই ফোঁটা আয়োডিনের দ্রবণ যোগ করতে হবে। তারপর যদি আয়োডিনের  দ্রবণ বেগুনি রঙ ধারণ করে, তবে এটি নির্দেশ করে যে ঘিটি স্টার্চের সাথে মিশ্রিত হয়েছে এবং এটা ভেজাল ঘি। এই ঘি আমাদের শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। এই ঘি কোনো ভাবেই ব্যবহার করা উচিত নয়।

পদ্ধতি ৫

একটি স্বচ্ছ ছোট বোতলের মাধম্যেও ঘি পরীক্ষা করা যায়। একটি স্বচ্ছ বোতলে এক চা চামচ ঘি নিতে হবে এরপর এতে এক চিমটি চিনি যোগ করতে হবে। পাত্রটি বন্ধ করে জোরে করে ঝাঁকি দিতে হবে , পাঁচ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। তারপর যদি বোতলের নীচে লাল রঙ দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে ঘিতে উদ্ভিজ্জ তেল রয়েছে। এটি ভেজাল ঘি।

উপসংহার:

অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। তাই পরিমিত বিশুদ্ধ ঘি আমরা নিয়মিত গ্রহণ করতেই পারি।

যেসব খাবার খেলে ক্যান্সার হয়

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button